ইফতার ও সেহরী কেমন হওয়া চাই
রমজান মাসের রোজা প্রত্যেক মুসলিমদের উপর
ফরয করা হয়েছে। সেহেতু সমগ্র মুসলিম জাতি রমজান মাস এলে সবাই রোজা রাখার
প্রস্তুতির সাথে দৈনন্দিন কাজেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। এ মাসে সুস্থ-অসুস্থ সবাই
সিয়াম পালনের জন্য চেষ্টা করে থাকেন। যারা সুস্থ তাদের রোযা রাখার মধ্যে রয়েছে
অশেষ কল্যাণ। যেমন দৈহিক, মানসিক, আত্মিক সহ বহু ধরনের। রোযা রাখার মাধ্যমে
স্বাস্থ্য ঝুকির কোন সম্ভাবনা নেইতো নেই বরং স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে রোযার
অবদান অপুরণীয়।
আমরা বাংলাদেশিরা অত্যন্ত রসনা ও ভোজন পটু। সেটি ইফতার
কিংবা সেহরী হোক। কিন্ত তা সঠিক ও স্বাস্থ্সম্মত নয়। রমজান মাস এসে গেল তার উপর
খুবই গরম। তাই আমাদের খাদ্যাভ্যাসটাও বদলাতে হবে। না হয় স্বাস্থঝুকির সম্ভাবনা
রয়েছে। সরাদিন উপোষ থাকার পর আমরা ইফতারে তেলে ভাজা রসনা সমৃদ্ধ খাবার বেশি পছন্দ
করি, যাহা স্বাস্থ্যের জন্য ভিষন ক্ষতিকর।
সেহরি ও ইফতার-এর আইটেম কেমন হওয়া চাই---
বিশেষ করে আমাদের দেশে রোযাদারদের মধ্যে যে খাদ্যাভ্যাস
লক্ষ্য করা যায় তা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আমরা সেহরি ও ইফতারের অধিকাংশ খাবারই
হচ্ছে উচ্চমাত্রার চর্বিসমৃদ্ধ তেল ও মসল্লায় ভাজা। সেহরি ও ইফতারের খাবারে রোজাদারের বয়স ও শারিরীক অবস্থাকে বিবেচনায়
রাখতে হবে। পরিমিত ও সুষম খাবারের মাধ্যমেই
স্বাস্থ্য সুরক্ষা হয়। বেশি খেলে তার কুফল ভোগ করতে হবে। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি
খেলে দিনের বেলায় ক্ষুদাও বেশি হবে। পরিমিত পরিমাণে খেলে ক্ষুধা অত তীব্র হয় না।
তাছাড়া অতিরিক্ত খেলে বমি, পেট ব্যথা,
গ্যাস্ট্রাইটিস, পেট ফাঁপা, মাথা ধরা প্রভৃতি।সারা দিন রোজা রাখার বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার বেশি
খেলে যেমন শরীরের ওজন বেড়ে যায়, তেমনি হজমেও গোলমাল হতে
পারে। অতিরিক্ত তেল, মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিজাতীয় খাবারতাই বর্জন করতে হবে।
রোজার সময় আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আসে। স্বাভাবিক হজম-প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত তেল, মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া ঠিক নয়। বিরিয়ানি, তেহারি, নেহারি, খাসির রোস্ট-জাতীয় খাবার সেহরি বা রাতে না খাওয়াই ভালো।কারন এসব খাবার স্বাস্থ্যের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করতে পারে।
রোজার সময় আমাদের দেহের বিপাকক্রিয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আসে। স্বাভাবিক হজম-প্রক্রিয়ার জন্য অতিরিক্ত তেল, মসলাযুক্ত খাবার, চর্বিজাতীয় খাবার খাওয়া ঠিক নয়। বিরিয়ানি, তেহারি, নেহারি, খাসির রোস্ট-জাতীয় খাবার সেহরি বা রাতে না খাওয়াই ভালো।কারন এসব খাবার স্বাস্থ্যের অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করতে পারে।
সেহরির খাবার নির্বাচন --
মূলত বছরের ১২ মাসের মধ্যে ১১ মাস একটা নিয়মে খাওয়া-দাওয়া ও
ঘুম হয়। রমজান মাসে সম্পূর্ণ নতুন নিয়মে সেহরি খাওয়ার ফলে সময়ের পরিবর্তন হয়।
সেহরীতে স্বাভাবিক খাবার খাওয়া যায় তবে, খেয়াল রাখতে হবে- খাবারটা যেন সহজলভ্য ও স্বাস্থ্যসম্মত
হয়। আমরা মাছে ভাতে বাঙ্গালি তাই বাঙালির মুখ্য খাবারই খাওয়া দরকার। সে হিসাবে সেহরিতে অবশ্যই সাদা ভাত রাখা চাই। ভাতের সাথে উচ্চ
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার যেমন- মাছ, মাংস ও ডিম। অল্প খরচে ভাতের
সাথে শুধু ডিম ও ডাল, সব্জি হলে আরো ভাল কারণ এতে ক্ষতিকর চর্বি নেই। সেহরিতে
খাবার তালিকায় সবজির মধ্যে শসা, পেঁপে, করলা, আলু, টমেটো, চিচিংগা এর মতো তরকারী হওয়া
উচিত। পাকস্থলীকে উত্তেজিত করে এমন খাবার না খাওয়াই উত্তম।
ইফতারে খাবার নির্বাচন --
আমাদের দেশে সাধারণত দেখা যায় জোহর নামাজের পর হতেই
ইফতারের তোরেজাড় শুরু হয়। মনে হয় একটু দেরি হলেই ইফতারের খাবার আর পাওয়া যাবেনা।
তাই যে যেইদিকে পারে পথ-ঘাটে, রাস্তার পাশ থেকে মুখরোচক অতিরিক্ত তেল সমৃদ্ধ
ইফতারি কেনার প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে। ইফতারে মেনুতে উত্তেজক খাবার একেবারেই বর্জন
করতে হবে। ইফতার শুরু করবেন শরবত দিয়ে। তবে শরবত যেন হয় প্রাকৃতিক কোনভাবে
কৃত্রিম রঙ মেশানো শরবত খাবেন না। ইফতারে
ফলের রস বেশ উপকারী। তাই ঋতু অনুযায়ী যেকোন ফল খাওয়া দরকার। এতে থাকে প্রচুর
ভিটামিন ও খনিজ, যা আপনাকে স্বাস্থ্য বিপর্যয় থেকে রক্ষা
করবে। অল্প পরিমানে বুট, ছোলা ও মুড়ি খাওয়া যায়। দই,
চিঁড়া ও কলা খাওয়া উত্তম। তবে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার যেমন বেগুনি
ও পেঁয়াজু, চপ ইত্যাদি স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে পারে। ইফতারে খেঁজুর ও বিভিন্ন ফল রাখা
ভালো। সারা দিন না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয়। খেজুর সেই
ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। সেহরি এবং ইফতারির সময় হঠাৎ করে একসাথে প্রচুর পানি পান
করবেন না। অল্প পরিমানে
কিছুক্ষণ পর পর পানি পান করুন যা আপনার শরীরের কোষগুলোকে সজীব রাখবে।
আজ এই পর্যন্ত, সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই প্রত্যাশা
রাখি।
0 Comments