ঘুরে আসুন ফটিকছড়ির হাজারীখিল পর্যটন কেন্দ্র



ফটিকছড়ির হাজারীখিল হতে চলেছে পর্যটন কেন্দ্র
বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার অন্যতম ও সবচেয়ে বড় উপজেলা হচ্ছে ফটিকছড়ি ভৌগলিক ও প্রকৃতিকভাবে খুবই সুন্দর এই ফটিকছড়ি। এই সুন্দর ফটিছড়ির পুর্বে রয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম, পশ্চিমে মীরস্বরাই ও সীতাকুন্ড, উত্তরে রামগড় ও ভারত সীমান্ত প্রদেশ ত্রিপুরা দক্ষিনে হাটহাজারী উপজেলা। ফটিকছড়ি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে দিন দিন আলোচিত হয়ে আসছে। ফটিকছড়ির বিস্তৃর্ন পাহাড়ী সমভুমি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর। সবুজের বিস্তীর্ণ সমরোহে প্রকৃতি অপরূপ সাজে সাজিয়েছে ফটিকছড়িকে। পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুললে পাওয়া যাবে শত শত দর্শনীয় স্থান। ফটিকছড়িকে সবচেয়ে বেশি সৌন্দর্য করে তুলেছে চা-বাগান, রাবার বাগান, নানা জাতীয় বৃক্ষাদির বাগানসহ, ছোট-বড় পাহাড়ী খাল, জলাশয়, ছড়া, সবুজে ঘেরা পাহাড় ফটিকছড়িতে রয়েছে ১৭টির অধিক ছোট বড় চা-বাগান। বাগানগুলোর দৃশ্য এতই সুন্দর যে মনে প্রকৃতি যেন নিজ হাতে গড়ে দিয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনন্য লীলা নিকেতন সবুজে ঘেরা সুন্দর উপজেলায় রয়েছে অসংখ্য বনভূমি, চা বাগান, রাবার বাগান, সেগুন বাগান। তম্মধ্যে বর্তমানে ভ্রমন পিপাসুদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে হাজারীখীল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। সেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন জড়ো হচ্ছে শত শত নারী-পুরুষ।
যেভাবে যেতে হবে: চট্টগ্রাম অক্সিজেন থেকে গাড়ি(বাস) ধরে অথবা মুরাদপুর হতে সিএনজি করে ফটিকছড়িস্থ বিবির হাট নেমে সি এন জি নিতে হবে। যারা সময় বাঁচাতে চান তারা চট্টগ্রাম থেকে নাজিরহাট নেমে পুরাতন ব্রীজ মোড় হতে সিএনজি রিজার্ভ করে যেতে পারেন।যারা গাড়ী রিজার্ভ করে যাবেন তারা তারা নাজিরহাট- সুয়াবিল হয়ে গেলে সময় বাঁচাতে পারবেন।
বিশেষভাবে স্মরণীয়: সেখানে যে হোটেল আছে তাতে আগে থেকে অর্ডার দিতে হবে। তাই বিড়ম্বনা এড়াতে যাওয়ার সময় শুকনো নাস্তা বা চাহিদা অনুযায়ী খাবার নিয়ে যাবেন।

হাজাল খিল অভয়ারণ্য : চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানাস্থ হারুয়ালছড়ি ইউনিয়নের হাজারীখীল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হাজারীখিল রেঞ্জের হাজারীখিল ও ফটিকছড়ি বিট এলাকায় বন বিভাগ ও ক্রেলর সহযোগিতায় ২০১০ সালে ২ হাজার ৯ শত ৮ হেক্টর পাহাড়ী অঞ্চলে সরকারিভাবে গড়ে উঠেএখানে আছে নানা প্রজাতির প্রায় ২শত ৫০ রকমের গাছ ও ১ শত ৫০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এটি বাংলাদশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত এলাকা। হাজারীখীল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অঞ্চলটি প্রাকৃতকি সৌর্ন্দয্যের এক অপরূপ লীলাভূমী চারপাশে চা-বাগান বিস্তৃত। গেইট দিয়ে ঢুকে অল্প দুর যেতেই চোখে পড়বে চা-বাগানের অপরূপ দৃশ্য। রাস্তার উভয় পাশে চা-বাগানের দৃশ্য দেখতে পৌঁছে যাবেন কাঙ্খিত লক্ষ্যে।
সরজেমিনে দেখা যায়, হাজারীখীল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য অঞ্চলটি প্রাকৃতকি সৌর্ন্দয্যের এক অপরূপ লীলাভূমী চারপাশে চা-বাগান বিস্তৃত। এখানে এখানে বহু বিপন্নপ্রায় প্রাণীসংকূল রয়েছে, যা বাংলাদেশের অন্য কোনো অভয়ারণ্য অঞ্চলে পাওয়াটা র্বতমান সময়ে দুষ্কর। বাংলাদেশের বিরল প্রজাতির বৃক্ষ এবং প্রাণীর জন্য হাজারীখলি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য একটি উল্লখেযোগ্য স্থান। বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু বৃক্ষ খ্যাত বিরল প্রজাতরি বৃক্ষ-বলৈাম এ অভয়ারণ্য অঞ্চলে বিদ্যমান। এ বৃক্ষের উচ্চতা প্রায় ১০০ মিটার। উচ্চতম বিরল প্রজাতির এ বৃক্ষটি হাজারীখিল বনাঞ্চল ব্যতীত বাংলাদেশের অন্য কোথাও দেখা যায় না। আমরা বনছাগলের কথা শুনেছি তবে দেখার শুভাগ্য হয় নাই। এই বনছাগল র্বতমানে এই বনাঞ্চলইে দেখতে পাবেন।
এছাড়া হাজারীখীল বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে অন্যান্য উল্লেখযোগ্য জীববৈচিত্র্য হল বনকুকুর, বনমুরগি, তক্ষক, গিরগিটি, মুখপোড়া হনুমান, বানর, গুইসাপ, বড় অজগর, হরিণ, মেছোবাঘ, বন্যশূকর ইত্যাদি। বৃক্ষরাজির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল সেগুন, র্গজন, গামারি, চাপালিশ, তেলসুর, জারুল, লোহাকাঠ, ছাতিয়ান, গুটগুটিয়া, লটকন ইত্যাদি। পাখির মধ্যে মথুরা, শালিক, ঘুঘু, চড়ুই, টিয়া, বক, দোয়েল, ময়না, ইত্যাদি ছাড়াও আছে হরেক রকম পাখি যা বিলুপ্তপ্রায়। এই বিলুপ্তপ্রায় পাখির মেলা এখানে দেখাতে পাবেন।  

Post a Comment

0 Comments